বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৫: তারিখ, ইতিহাস, গুরুত্ব ও গৌতম বুদ্ধের অমৃত বাণী-Buddha Purnima 2025
বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে পবিত্র উৎসব। এই দিনে গৌতম বুদ্ধের জন্ম, জ্ঞান লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ—এই তিনটি ঘটনাই একই দিনে ঘটেছিল। তাই এই দিনটি ত্রিসন্ধ্যা পূর্ণিমা নামেও পরিচিত।
২০২৫ সালে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালিত হবে ১১ মে, রবিবার। এই দিনটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আনন্দ ও ধর্মীয় পরিবেশে পালন করা হয়। বৌদ্ধরা এই দিনে মন্দিরে প্রার্থনা, দানধ্যান ও শান্তির বার্তা ছড়ান।
বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৫: তারিখ ও ছুটির তথ্য
- তারিখ: ১১ মে ২০২৫, রবিবার (বাংলা মাস: বৈশাখের পূর্ণিমা)
- বাংলাদেশে ছুটি: সকল সরকারি অফিস, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে
- আন্তর্জাতিক উদযাপন: নেপাল, ভারত, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারে ব্যাপকভাবে উদযাপন হয়
Read More
সরকারি/বেসরকারি ছুটির তালিকা দেখ
ডিসেম্বর মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
নভেম্বর মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
অক্টোবর মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
সেপ্টেম্বর মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
এপ্রিল মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
ফেব্রুয়ারি মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
জানুয়ারি মাসের ছুটির তালিকা ২০২৫
বুদ্ধ পূর্ণিমার ইতিহাস ও তাৎপর্য
১. গৌতম বুদ্ধের জন্ম
গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ সালে। তাঁর জন্মস্থান নেপালের লুম্বিনী উদ্যান।
তাঁর নাম ছিল সিদ্ধার্থ গৌতম। জ্যোতিষীরা বলেছিলেন, তিনি হবেন এক মহান রাজা অথবা একজন মহাজ্ঞানী।
২. বোধিলাভ (জ্ঞান লাভ)
২৯ বছর বয়সে সিদ্ধার্থ রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করেন। ছয় বছর কঠোর সাধনা করেন।
পরবর্তীতে ভারতের বোধগয়ায় একটি পিপল গাছের নিচে তিনি জ্ঞান লাভ করেন।
সেই সময় তিনি “বুদ্ধ” উপাধি পান, যার অর্থ—জ্ঞানপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
৩. মহাপরিনির্বাণ (মৃত্যু)
৮০ বছর বয়সে ভারতের কুশীনগরে গৌতম বুদ্ধ মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন।
তাঁর মৃত্যুর আগে বলা শেষ বাণী ছিল—
“অপ্প দীপো ভব” অর্থাৎ “তোমরা নিজেরাই আলো হও।”
বুদ্ধ পূর্ণিমা কেন পালন করা হয়?
- ত্রিসন্ধ্যার স্মরণে: জন্ম, জ্ঞান লাভ ও পরিনির্বাণ একসাথে স্মরণ করা হয়
- শান্তি ও অহিংসার বার্তা ছড়ানো: বুদ্ধের শিক্ষা বিশ্বে শান্তি ও সহনশীলতার প্রতীক
- পুণ্য অর্জন: দান, প্রার্থনা, ধ্যান ও সৎকর্মের মাধ্যমে পুণ্য লাভ
বুদ্ধ পূর্ণিমার বিশেষ খাবার ও উদযাপন
১. খাবার ও দান
- খিচুড়ি, পায়েস ও মিষ্টান্ন ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়
- ফলমূল ও শুকনো খাবার দান করা হয়
- দান করাকে অত্যন্ত পুণ্যের কাজ হিসেবে দেখা হয়
২. মন্দিরে অনুষ্ঠান
- বুদ্ধমূর্তি ফুল দিয়ে সাজানো হয়
- প্রদীপ প্রজ্বালন ও ধর্মগ্রন্থ পাঠ হয়
- ধ্যান ও প্রার্থনা করা হয়
- বাংলাদেশে রামু, কক্সবাজারে শোভাযাত্রা হয়
গৌতম বুদ্ধের অমৃত বাণী
- “অহিংসা পরম ধর্ম” – হিংসা দিয়ে শান্তি আনা যায় না
- “মনই সবকিছুর মূল, মনই আগে, কর্ম পরে” – চিন্তার শক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
- “ক্ষমাই সর্বশ্রেষ্ঠ জয়” – প্রতিশোধ নয়, ক্ষমাই শ্রেষ্ঠ গুণ
বুদ্ধ পূর্ণিমা সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
- বৈশাখী পূর্ণিমা: হিন্দু ও বৌদ্ধ উভয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ
- শ্রীলঙ্কা: ক্যান্ডি শহরে বড় আকারের আলোকসজ্জা ও উৎসব হয়
- থাইল্যান্ড: “বিষাক বুচা” নামে পরিচিত, মোমবাতি নিয়ে মন্দির ঘোরেন ভক্তরা
বুদ্ধ পূর্ণিমা শুধু একটি ধর্মীয় দিন নয়। এটি শান্তি, অহিংসা ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক।
২০২৫ সালের ১১ মে আমরা সবাই বুদ্ধের শিক্ষা গ্রহণ করে জীবনে শান্তি, প্রেম ও জ্ঞানের আলো ছড়াতে পারি।
